cyber-security-course
Category – Specialized Courses

বর্তমানে আমাদের জীবন জুড়ে রয়েছে ইন্টারনেট। আর এই ইন্টারনেট আমরা কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল ইত্যাদিতে ব্যবহার করে থাকি। অফিসের কাজ হোক কিংবা রাস্তাঘাটে সোশ্যাল মিডিয়া বা বাড়িতে বসে মুভি দেখা সর্বত্রই আমাদের ইন্টারনেট প্রয়োজন। কাজ অথবা বিনোদন স্বাভাবিক কারণেই নানান তথ্য আমাদের কম্পিউটার বা ল্যাপটপে বা মোবাইলে জমে থাকে।

অসাধু হ্যাকাররা এই ইন্টারনেটের সাহায্য নিয়ে চুপিসাড়ে আমাদের এই সব যন্ত্রে হানা দিতে পারে এবং সেখান থেকে ছবি বা তথ্য চুরি করে বিভিন্ন অপরাধ করতে পারে। এই ধরণের অপরাধকে বলা হয় সাইবার ক্রাইম। এই ধরণের অপরাধ থেকে বাঁচার জন্য মোবাইল বা কম্পিউটারে এক ধরণের সিকিউরিটি ব্যবহার করা হয়, একে বলে সাইবার সিকিউরিটি।

আজ আমরা এই সাইবার সিকিউরিটি শেখার জন্য যে কোর্স রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করবো এই প্রবন্ধে। তাহলে শুরু করা যাক আজকের আলোচনা।

সাইবার সিকিউরিটি কোর্স কি?

কম্পিউটার সিস্টেম ও নেটওয়ার্কের হার্ডওয়্যার, সফ্টওয়্যার থেকে যে ডেটা চুরি বা ক্ষতি হয়, তা কিভাবে রক্ষা করা যায় সেই বিষয়টিই হল সাইবার সিকিউরিটি কোর্সের মূল পাঠ্য। সুতরাং আমরা বলতে পারি যে কোর্সে সাইবার সিকিউরিটি শেখানো হয়, তাকেই বলে সাইবার সিকিউরিটি কোর্স।

সাইবার সিকিউরিটি কোর্সে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে শেখানো হয়, যেমন – কিভাবে কম্পিউটার সিস্টেমের দুর্বলতা শনাক্ত করা, ডিজিটাল ক্রাইমকে বোঝা এবং ডেটা সুরক্ষা দেওয়া, সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ করার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হয় সেই সম্পর্কে শেখানো হয়।

সাইবার সিকিউরিটি কোর্সের বিভিন্ন ডিগ্রি হয়, যথা –

  1. Diploma in Cyber Security
  2. B.Sc in Cyber Security
  3. B.Tech in Cyber Security
  4. Post-Graduate Diploma in Cyber Security
  5. Certificate course in Cyber Security ইত্যাদি।

উপরের কোর্সগুলির মধ্যে B.Sc in Cyber Security ও B.Tech in Cyber Security কোর্স সম্পর্কে নীচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হল।


আরো পড়ুন –Diploma in Cyber Law | সাইবার ল ডিপ্লোমা কোর্সের আলোচনা

B.Sc in Cyber Security| বিএসসি ইন সাইবার সিকিউরিটি

বিএসসি (B.Sc) সাইবার সিকিউরিটি কোর্স হল স্নাতক ডিগ্রি কোর্স। এই কোর্সের সময়সীমা 3 বছর। এই কোর্সটিতে শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার নেটওয়ার্কগুলিকে সাইবার অ্যাটাক থেকে রক্ষা করার জন্য টেকনিক্যাল এবং থিওরিটিক্যাল প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

কিভাবে পড়বো বিএসসি সাইবার সিকিউরিটি কোর্স?

এই কোর্সে ভর্তি হওয়ার জন্য যে কোনো স্ট্রিম নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক বা সমতুল (10+2) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। সাধারণত উচ্চমাধ্যমিকের প্রাপ্ত নাম্বারের ভিত্তিতে এই কোর্সে ভর্তি হওয়া যায়। আবার কিছু কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষা (যেমন – CUET) উত্তীর্ণ হতে হয়।

CUET প্রবেশিকা পরীক্ষা সম্পর্কে পড়ে নাও↓ 

CUET (UG) | কমন ইউনিভার্সিটি এন্ট্রান্স এক্সাম

 বিএসসি সাইবার সিকিউরিটি কোর্স কোথায় কোথায় পড়ানো হয়?

পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষের বিভিন্ন কলেজে এই বিএসসি সাইবার সিকিউরিটি কোর্স পড়ানো হয়। নীচে কয়েকটি কলেজের নাম উল্লেখ করা হল –


আরো পড়ুন – ডিজিটাল মার্কেটিং সার্টিফিকেট কোর্স | Certificate Course of Digital Marketing

B.Tech in Cyber Security | বিটেক ইন সাইবার সিকিউরিটি

বিটেক (B.Tech) সাইবার সিকিউরিটি কোর্স হল কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং-এর একটি শাখা। এই কোর্সটি 4 বছরের হয়। একই রকমভাবে এই কোর্সটিতে শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার সিস্টেমের দুর্বলতা শনাক্ত করা, ডিজিটাল ক্রাইমকে ক্রাইমকে বোঝা এবং ডেটা সুরক্ষা দেওয়া, সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ করার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হয় সেই সম্পর্কে শেখানো হয়।

মনে রাখতে হবে, B.Sc সাইবার সিকিউরিটি কোর্সের থেকে B.Tech সাইবার সিকিউরিটি কোর্সে সাইবার সিকিউরিটি সম্পর্কে আরো বেশি জানার সুযোগ থাকে এবং B Tech কোর্স করে চাকরী পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

কিভাবে পড়বো বিটেক সাইবার সিকিউরিটি কোর্স?

বিটেক সাইবার সিকিউরিটি কোর্স পড়ার জন্য প্রথমে উচ্চমাধ্যমিক বা সমতুল (10+2) পরীক্ষা বিজ্ঞান বিভাগ অর্থাৎ পদার্থবিদ্যা (Physics), রসায়নবিদ্যা (Chemistry) ও গণিত (Mathematics) বিষয় তিনটি নিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। এরপর প্রবেশিকা পরীক্ষা WBJEE বা JEE (Main) উত্তীর্ণ হতে হয়।

JEE (Main) Exam details
JEE (Main) পরীক্ষা সম্পর্কে আলোচনা

বিটেক সাইবার সিকিউরিটি কোর্স কোথায় কোথায় পড়ানো হয়?

বর্তমানে সাইবার সিকিউরিটির চাহিদা বেশি থাকায় পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষের বিভিন্ন কলেজে তা পড়ানো হচ্ছে, নীচে কয়েকটি বিটেক কলেজের নাম দেওয়া হল –


আরো পড়ুন –ইনফোরমেশন টেকনোলজি কোর্স | B.Tech in Information Technology

সাইবার সিকিউরিটি কোর্সে কি কি পড়তে হয়?

সাইবার সিকিউরিটির বিটেক ও বিএসসি কোর্সে সাধারণত যে যে বিষয়গুলি পড়তে হয়, সেগুলি হল –

  • Information Security
  • Security Strategies
  • Security Economics and Policy
  • Data Collection and Processing
  • Operational Security Management
  • Database Management System
  • Computer Network
  • Network Security ইত্যাদি।

আরো পড়ুন –ডেটা সায়েন্স কোর্স | B.Sc in Data Science

সাইবার সিকিউরিটি কোর্স ফি কত?

বিভিন্ন কলেজে কোর্স ফি ভিন্ন হয়, সরকারি কলেজে কোর্স ফি তুলনামূলক কম বেসরকারি কলেজের কোর্স ফি থেকে। আবার বিটেক কোর্স ও বিএসসি কোর্সের ফিও আলাদা হয়। আমরা শুধুমাত্র নীচে একটি ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করলাম –

  • বিটেক (B.Tech) সাইবার সিকিউরিটি কোর্স ফি – 50,000 থেকে 10 লাখ
  • বিএসসি (B.Sc) সাইবার সিকিউরিটি কোর্স – 25,000 থেকে 5 লাখ

সাইবার সিকিউরিটি কোর্সের ভবিষ্যৎ কেমন?

আগেই বলা হয়েছে বর্তমানে সাইবার সিউকিউরিটিদের চাহিদা রয়েছে, তাই ভালোভাবে এই কোর্স শেষ করলে ভালোভাবে কাজের সুযোগ পাওয়া যাবে।

বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ! তাই আজকের সময়ে অনেক ছোট – বড় কোম্পানি সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্টদের চাকরি দিচ্ছেন। এই ধরণের কোর্স থেকে দেশে বিদেশে বিভিন্ন চাকরির সুযোগ রয়েছে। তাই বলা যায় যে এই কোর্স পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল।

সাইবার সিকিউরিটি কোর্স করে যে ধরনের কাজের সুযোগ পাওয়া যায়, তা হল –

  • Security Analyst
  • Security Manager
  • Cyber Security Architect
  • Cyber Security Engineer
  • Security Code Auditor
  • Security Administrator
  • Forensic Expert
  • Cryptographer
  • Information Security Lead ইত্যাদি।

আরো পড়ুন – B.Tech in Internet of Things | B.Tech IoT

কিছু বিখ্যাত কোম্পানি যারা সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্টদের চাকরী দিয়ে থাকেন –

  • Tata Consultancy Services
  • Infosys
  • Intel
  • Apple
  • Nokia
  • Cisco
  • Amazon
  • General Motors
  • Federal Reserve Bank of New York
  • Patient First
  • Capital One ইত্যাদি।

আরো পড়ুন – B.Tech in Blockchain Technology Course | ব্লকচেইন টেকনোলজি বিটেক কোর্স

সাইবার সিকিউরিটি কোর্স করে কি সরকারি চাকরি পাওয়া যায়?

সাইবার সিকিউরিটি কোর্সের ডিগ্রি (B.Sc/B.Tech) কোর্স করা থাকলে অবশ্যই সরকারি চাকরি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সরকারি ব্যাঙ্ক, ইনফোরমেশন কোম্পানি ইত্যাদি বহু জায়গায় কাজের সুযোগ রয়েছে। তবে এই কোর্সটি অপেক্ষাকৃৎ নবীন হওয়ার কারণে, বর্তমানে সরকারি চাকরীর তুলনায় বেসরকারি ক্ষেত্রে চাকরির সুযোগ বেশি।

পর্ব সমাপ্ত!

কেরিয়ার ও ব্যবসা সম্পর্কিত কোনো প্রশ্ন থাকলে বা কি রকম ধরনের পোস্ট চাইছো, তা নীচের ছবিটায় ক্লিক করে জানাতে পারো↓

careerbondhu-telegram-channel

বিশেষ দ্রষ্টব্য

  • এই নিবন্ধে ব্যবহৃত তথ্য ইন্টারনেট, সংবাদ পত্র, পত্রিকা, প্রকাশিত রিপোর্ট ইত্যাদি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। নিবন্ধে ব্যবহৃত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কোর্সের নাম ইত্যাদি শুধুমাত্র শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে। এই ব্যাপারে আরো জানার জন্য এই পাতাটি পড়ে নেবার অনুরোধ রইল → Disclaimer
  • নিবন্ধটি আমরা যথাসম্ভব ত্রুটি মুক্ত রাখার চেষ্টা করেছি, তথ্যে কোনরূপ ত্রুটি চিহ্নিত হলে তা অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি হিসাবে গণ্য হবে, চিহ্নিত ত্রুটি এই পাতা থেকে তা আমাদের জানানো যেতে পারে → Report an error
error: Content is protected !!