Category – Govt Jobs
আমাদের অনেকেরই স্বপ্ন থাকে সরকারী চাকুরীজীবী হওয়ার। কিন্তু, সঠিক দিশার অভাব আমাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ইন্টারনেটে হাজারও এই সংক্রান্ত কন্টেন্টের ভিড়ে সদ্য কলেজের শিক্ষা শেষ করা লক্ষাধিক তরুণরা অসহায়বোধ করে। কিছুদিন প্রচেষ্টা চালিয়ে ‘সরকারী চাকরি আমার জন্য নয়’ এই ভেবে হতাশ মনে অন্য কোনো কর্মচেষ্টা শুরু করে।
আরো পড়ুন – WBCS পরীক্ষা কি?
তাই সাফল্য লাভের জন্য প্রয়োজন সঠিক দিশা। আত্মবিশ্বাসের সাথে পরিকল্পনামাফিক পড়াশুনা ও ধৈর্যই সাফল্য লাভের একমাত্র চাবিকাঠি। কেন্দ্র ও রাজ্যের কর্মী নিয়োগের বিভিন্ন পরীক্ষা রয়েছে, তবে এই পর্বে আমরা প্রধানত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পাবলিক সার্ভিস কমিশনের অন্তর্গত WBCS পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করবো।
Table of Contents
WBCS পরীক্ষার প্রস্তুতির গাইড
WBCS পরীক্ষাটি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য স্তরের সরকারি কর্মচারি নিয়োগের সর্বোচ্চ পরীক্ষা, মূলত বিভিন্ন দপ্তরে সরকারী আধিকারিক এই পরীক্ষার মাধ্যমে নিযুক্ত হয়। তাই প্রস্তুতি মনোযোগ দিয়ে নেওয়া উচিৎ।
প্রথমেই বলে রাখি, যে কোনো স্নাতক ক্যান্ডিডেটই অধ্যাবসায়, ধৈর্য এবং সঠিক প্রস্তুতি নিলে অবশ্যই সাফল্য লাভ করতে পারবেন।
পরীক্ষাটি মূলত তিন ধাপে হয় আগেই আলোচিত হয়েছে তাই প্রস্তুতিকেও একটু ধাপে ধাপে নেওয়া প্রয়োজন।
[উপরের এই সমস্ত টিপস যে কোনো সরকারী চাকরীর পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজন। তাই প্রতিক্ষেত্রে উল্লেখ করা হল না।]
আমাদের Facebook পেজ লাইক করার অনুরোধ রইল। ↓
মেইন্সকে লক্ষ্য রেখে প্রস্তুতি শুরু করুন
যারা WBCS অফিসার হবার স্বপ্ন দেখছেন গোড়াতেই বলি মেইন্সের প্রস্তুতি নেওয়াই প্রথম থেকে শুরু করুন, মেইন্সকে লক্ষ্য রেখে সঠিক প্রস্তুতি নিলে অবশ্যই প্রিলিমিনারি, মেইন্স উভয় পরীক্ষাতেই উত্তীর্ণ হতে পারবেন।
প্রিলিমিনারি উত্তীর্ণ হয়ে তারপর মেইন্সের প্রস্তুতি নিতে শুরু করলে তা কখনই ফলপ্রসু হবেনা, অত বিস্তারিত পড়াশুনা ঐ অল্প সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ করা প্রায় অসম্ভব। তাই প্রথম থেকেই মেইন্সকে লক্ষ্য রেখে প্রস্তুতি নিতে হবে।
মেইন্স ও প্রিলিমিনারিতে মূলত যে পার্থক্যটা সবচেয়ে চোখে পড়ে সেটি হল ভাষার ক্ষেত্রে; এখানে ইংরাজি ও বাংলা (বা বাংলা ছাড়া অন্যান্য যে যে ভাষায় পরীক্ষাটি দেওয়া যায়) বর্ণনামূলক হয় এবং প্রিলিমিনারিতে বাংলা (বা বাংলা ছাড়া অন্যান্য যে যে ভাষায় পরীক্ষাটি দেওয়া যায়) থাকেনা। কিন্তু বাকি বিষয়গুলি মূলত একই থাকে তবে আরো বিস্তারিতভাবে থাকে মেইন্সে। তাই প্রথম থেকেই সম্পূর্ণ প্রস্তুতি শুরু করা আবশ্যক।
গণিত প্রস্তুতিতে আলাদা নজর দেওয়া
বেশিরভাগ ক্যান্ডিডেটদেরই অঙ্ক-GI ও ইংরাজিতে ভয় থাকে; তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, মাধ্যমিক বা সমতুল (10) শ্রেণির গণিত বই ভালভাবে প্র্যাকটিস করতে হবে, সময়সীমা বেঁধে (পারলে smart phone এ timer চালিয়ে) অঙ্ক ও GI ভালোভাবে প্র্যাকটিস করতে হবে। দ্রুত অঙ্ক শেষ করার বিভিন্ন short tricks রয়েছে। বাজার চলতি যে কোনো বই কিনে তা রপ্ত করতে হবে।
আরো পড়ুন – PSC ক্লার্কশিপ পরীক্ষা কি?
ইংরাজি গ্রামার প্র্যাকটিস করা
ইংরাজির ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাজার চলতি বই থেকে গ্রামার প্র্যাকটিস করতে হবে এবং মেইন্সের জন্য যা যা সিলেবাসে আছে (বা বিগত বছরে যে ধরণের প্রশ্ন এসেছে) নিয়মিত প্র্যাকটিস করা আবশ্যক। ইংরাজিতে আরো সাবলীল হওয়ার জন্য কোনো ইংরাজি সংবাদপত্র ও তাদের বর্তমানে লেখার ধরণ নিয়মিত পড়াশোনা করে রপ্ত করা আবশ্যক। বাংলা (বা বাংলা ছাড়া অন্যান্য যে যে ভাষায় পরীক্ষাটি দেওয়া যায়) ক্ষেত্রেও নিয়মিত লেখা প্রয়োজন। বাংলা সংবাদ পত্র, পারলে বিভিন্ন সংবাদ পত্রের লেখনীকে লক্ষ্য করতে হবে। তাতে বর্তমানে ভাষার পরিবর্তন বা ধরণ বুঝতে পারবেন।
বিগত বছরের প্রশ্নপত্র অভ্যাস করা
বাকি বিষয়গুলির ক্ষেত্রে বাড়ে বাড়ে পড়াশোনা করা, বিগত বছরগুলির প্রশ্ন study করা প্রয়োজনীয়। সেক্ষেত্রে প্রশ্নের ধরণ কীরূপ হয় এবং কিভাবে প্রতি বছর তা পরিবর্তিত হচ্ছে তার সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা করতে পারবেন।
সঠিকভাবে ঐচ্ছিক বিষয় বাছা
যারা WBCS গ্রুপ A ও গ্রুপ B পদে চাকরি করার স্বপ্ন দেখেন তাদের ক্ষেত্রে ঐচ্ছিক বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ঐচ্ছিক বিষয়টি বাছার ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে মাথায় রাখবেন আপনার ব্যাক্তিগত পছন্দ। আপনি কোন বিষয়ে স্নাতক হয়েছেন তারও আগে ব্যাক্তিগত ভাললাগাকে রাখা আবশ্যক। স্নাতক স্তরটি প্রতিযোগিতামূলক ছিলনা, তাই তার পরীক্ষার ধরণও আলাদা।
কিন্তু এই পরীক্ষা আপনার ব্যাক্তিগত জ্ঞানের থেকেও অনেক বেশি আপনি কতটা নিজের উত্তরপত্রকে বাকি ক্যান্ডিডেটদের থেকে বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে পারছেন পরীক্ষকদের কাছে। তাই ঐচ্ছিকের বিষয়টি খুবই ভেবে চিন্তে নির্বাচন করুন। আরো একটি বিষয় মাথায় রাখবেন অনেক ক্ষেত্রেই বহু সফল অফিসারই একবার পরীক্ষা দিয়ে সফলতা পাননি, অনেককেই এই পরীক্ষা বারে বারে দিয়ে সফলতা অর্জন করতে হয়েছে।
তাই যে বিষয়টি ঐচ্ছিক পত্রের জন্য প্রথমবার নির্বাচন করবেন চেষ্টা করবেন তা অপরিবর্তিত রাখতে। কারণ বারবার চর্চা আপনাকে ঐ বিষয়টিকে আত্মস্থ করতে বিশেষ সাহায্য করবে।
পার্সোনালিটি টেস্টের প্রস্তুতি
এবার আসি পার্সোনালিটি টেস্টের বিষয়ে। এটি মূলত মাথা ঠাণ্ডা রাখার পরীক্ষা। এখানে বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন অবশ্যই থাকবে, কিন্তু সবচেয়ে বেশি থাকে পরিস্থিতি বিষয়ক প্রশ্ন। তাই আত্মবিশ্বাসী থাকাটা সবথেকে জরুরী। কোনো পরিস্থিতিতেই ঘাবড়ে গিয়ে ভয় পেলে এই টেস্ট উত্তীর্ণ হওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়বে। সহজভাবে সহজ উত্তর দিন। না জানলে তা কোনোভাবে ভুল বলে সামাল দেওয়ার চেষ্টা না করাই মঙ্গল। সর্বোপরি আবারও বলব মাথা ঠাণ্ডা রাখুন।
WBCS পরীক্ষার্থীদের জন্য কিছু টিপস
• প্রতিদিন নিয়মিত সময় ধরে মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করতে হবে। অন্তত দিনে 7-8 ঘণ্টা।
• নিয়মিত খবরের কাগজ পড়তে হবে চারিদিকে সমাজে, দেশে, রাজ্য জুড়ে কি ঘটে চলেছে তার update রাখতে হবে।
• আড্ডা, পার্টি, সামাজিক হুল্লোড় যতটা সম্ভব কমানোর চেষ্টা করতে হবে।
• টিভি দেখা, সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাক্টিভ থাকার প্রবণতা কমাতে হবে, এই ধরণের অভ্যাস মনকে খুব দ্রুত বিক্ষিপ্ত করে দিতে পারে।
• পারলে প্রতিদিন অল্প সময়ের জন্য মেডিটেশন করে নিজেদের মনঃসংযোগ বাড়ানো যেতে পারে।
শেষে এটাই বলব ধৈর্য, লক্ষ্যে অবিচল থাকাই সাফল্য লাভের একমাত্র চাবিকাঠি। একবারে না পারলে ভেঙে পরবেন না আত্মবিশ্বাস অটুট রেখে প্রচেষ্টা চালিয়ে যান, সফলতা আসবেই।
পর্ব সমাপ্ত!
নিয়মিত আপডেট পাওয়ার জন্য ফলো করুন ↓
WhatsApp Channel | Telegram Channel | Facebook Page
বিশেষ দ্রষ্টব্য
- এই নিবন্ধে ব্যবহৃত তথ্য ইন্টারনেট, সংবাদ পত্র, পত্রিকা, প্রকাশিত রিপোর্ট ইত্যাদি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। নিবন্ধে ব্যবহৃত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কোর্সের নাম ইত্যাদি শুধুমাত্র শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে। এই ব্যাপারে আরো জানার জন্য এই পাতাটি পড়ে নেবার অনুরোধ রইল → Disclaimer।
- নিবন্ধটি আমরা যথাসম্ভব ত্রুটি মুক্ত রাখার চেষ্টা করেছি, তথ্যে কোনরূপ ত্রুটি চিহ্নিত হলে তা অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি হিসাবে গণ্য হবে, চিহ্নিত ত্রুটি এই পাতা থেকে তা আমাদের জানানো যেতে পারে → Report an error।