time-management-tips
Category – Tips

সময় বা টাইম, মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারলেই মানুষ এগিয়ে থাকবে। আমাদের কারোর জন্য কখন সময় থমকে বা দাঁড়িয়ে থাকে না, আমাদেরকেই সময়ের সাথে চলতে হয়। আর সময়ের সাথে পা মিলিয়ে চলার জন্য আমাদের সময় ম্যানেজ করা প্রয়োজন। তাই সঠিকভাবে কোন কাজ করার জন্য টাইম ম্যানেজমেন্ট আজ আমাদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।

এই প্রবন্ধে টাইম ম্যানেজ করার কিছু সহজ উপায় নিয়ে আলোচনা করবো।

কিভাবে সময় ম্যানেজ করবেন বা টাইম ম্যানেজমেন্ট করার কিছু সহজ উপায় সম্পর্কে জানার আগে টাইম ম্যানেজমেন্ট কি এবং কেন করবেন, তা জেনে নিন। তাহলে আজকের আলোচনা শুরু করা হল।

টাইম ম্যানেজমেন্ট কি?

টাইম ম্যানেজমেন্ট, যার বাংলা অর্থ হল সময় ব্যবস্থাপনা। খুব সহজে বলতে গেলে সময়কে নিজের মত করে চালানোর জন্য, নিজের কাজ অনুসারে সময়কে ভাগ করে নেওয়া এবং সেই সময় মত কাজগুলিকে শেষ করাই হল সময় ব্যবস্থাপনা বা টাইম ম্যানেজমেন্ট।

টাইম ম্যানেজমেন্ট করার উপকার | টাইম ম্যানেজমেন্ট কেন করবেন?

বিভিন্ন কারণে আমরা টাইম ম্যানেজমেন্ট করে থাকি। সাধারণত ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনা করার জন্য, চাকুরিজীবী মানুষরা অফিসের কাজ সময় মত শেষ করার জন্য এবং গৃহিণীরাও সব কাজ সঠিক সময়ে শেষ করার জন্য টাইম ম্যানেজমেন্ট করে থাকেন।

কোন কাজে সফলতা বা কোনো কিছু অর্জন করার জন্য সকলেই কম-বেশি টাইম ম্যানেজমেন্ট করে থাকে। টাইম ম্যনেজমেন্টের বহু উপকারিতা রয়েছে, যেমন –

টাইম ম্যানেজমেন্টের উপকারিতা:

  • লক্ষ্য স্থির করতে
  • সফলতা অর্জনে বা লক্ষ্যে পৌঁছাতে
  • চাপ বা স্ট্রেস কমাতে
  • কাজ, পড়াশোনা সব কিছু ব্যালেন্স করতে এবং
  • সময় বাঁচাতে ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে সাহায্য করে।

বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য টাইম ম্যানেজমেন্ট করা খুবই প্রয়োজনীয়। কারণ সারাদিনের সব কাজ সঠিক সময়ে শেষ করে, পড়াশোনার জন্য একটু বেশি সময় বের করলে, তা ভালো রেজাল্ট করতে সাহায্য করবে।


জেনে নাও – পড়ার উপযুক্ত পরিবেশ কিভাবে তৈরি করবে?

কিভাবে টাইম বা সময় ম্যানেজ করবেন?

টাইম ম্যানেজমেন্ট করার কয়েকটি ধাপ নীচে উল্লেখ করা হল:

লক্ষ্য স্থির করা

প্রথমে আপনি আপনার লক্ষ্য স্থির করে নিন। তারপর সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্যই আপনি টাইম ম্যানেজমেন্ট করা শুরু করবেন।

ধরা যাক; আপনার সামনে কোনো পরীক্ষা আছে বা অফিসের কোনো আর্জেন্ট কাজ আছে, সেটিকেই আপনার লক্ষ্য বানাবেন। পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট এবং সময় মতো সিলেবাস শেষ করার জন্য বা অফিসের কাজ সঠিক সময়ে সাবমিট করার জন্য আপনি টাইম ম্যানেজমেন্ট শুরু করলেন।

সময়ের তালিকা তৈরি করা

আপনার প্রয়োজন অনুসারে সময়কে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করে নিয়ে একটি তালিকা বা ছক তৈরি করে নিন। আপনি দৈনিক বা সাপ্তাহিক বা মাসিক এই তিনভাবে সময়ের তালিকা তৈরি করতে পারেন। সেই সময়ের তালিকায় কোন কাজ, কখন এবং কতক্ষণ করবেন তা ভাগ করে লিখে নিন।

Time table
সময়ের তালিকা প্রস্তুত করা

ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সময়ের দৈনিক তালিকা তৈরি করা উচিত, কারণ তাদের স্কুল, কলেজের ছুটির দিন এবং বিশেষ করে প্রাইভেট টিউশনের সময় ভিন্ন থাকে বলে প্রতিদিনের টাইম ম্যানেজমেন্ট করা বেশি উপযুক্ত। তারা চাইলে সাপ্তাহিকও করতে পারে।

ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে টাইম ম্যানেজমেন্টেরই একটি অংশ পড়াশোনার রুটিন তৈরি করা। তাহলে জেনে নিন – পড়াশোনার রুটিন কিভাবে তৈরি করবেন?

জরুরী কাজগুলি বেছে নেওয়া

আপনার জন্য কোন কাজটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরী তা বেছে নিন। জরুরী কাজগুলিকে সময়ের তালিকার প্রথম দিকে লিখে রাখুন। অন্য কোনো কাজে সময় নষ্ট না করে জরুরী কাজটিকে প্রায়োরিটি দিন।

Priority work
জরুরী কাজগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া

কাজকে ছোটো ছোটো ভাগে ভাগ করে নেওয়া

আপনি যদি কোনো বিরাট বা বড় কাজকে একসাথে করতে যান, তাহলে তা অনেকটা সময় নষ্ট করতে পারে। যে কোনো কাজই হোক না কেন সেগুলি ছোটো ছোটো করে ভাগ করে নিলে সময় অনেকটা কম লাগে, যার ফলে ওই ‘সেভ’ করা সময়ে আপনি অন্য কোনো কিছু করতে পারেন।

ধরা যাক, কোনো ছাত্র বা ছাত্রী মনে করল, সে আজ ভূগোল বিষয়ের একটি অধ্যায় পড়বে। সে যদি একটানা সেই অধ্যায়টি পড়ে, তাহলে তার বেশি সময় লাগবে। কিন্তু সে যদি ওই অধ্যায়টিকে টপিক অনুযায়ী ছোট ছোট ভাগ করে নেয় এবং তা সকালে দুপুরে রাতে ইত্যাদি বিভিন্ন সময়ে ভাগ করে পড়ে; তাহলে ছাত্র বা ছাত্রীটির পড়া তাড়াতাড়ি মুখস্থ হবে এবং কিছুটা সময় সেভ হবে বা বেঁচে যাবে।

অনেকগুলি কাজ একসাথে না করা

একসাথে অনেকগুলি কাজ না করে একটি একটি করে কাজ শেষ করা উচিত। কারণ একই সময় অনেকগুলি কাজ করলে যে কোনো একটি কাজে ফোকাস করা যায় না; তারফলে কোনো কাজটিই সঠিকভাবে এবং সঠিক সময়ে সম্পূর্ণ হবে না। তাই একটি কাজ শেষ করার পর অন্য একটি কাজ শুরু করা উচিত।

avoid-multitasking
অনেকগুলি কাজ একসাথে না করা

যে সময় যে কাজটি করবেন শুধুমাত্র ওই কাজটিতে মনোযোগ দিলে, তা তাড়াতাড়ি এবং সঠিক সময়ে শেষ করা যাবে এবং কাজটি সুন্দর এবং সঠিক হবে।

বিরতি নেওয়া

আপনার কাজ সময় মত শেষ করার পর মাঝে একটু ছোটো বিরতি বা ব্রেক নিন। এতে পরবর্তী কাজের প্রতি আপনার এনার্জি বৃদ্ধি পাবে, যার ফলে তাড়াতাড়ি কাজটি শেষ করতে পারবেন।


জেনে নাও – অফিসে কিভাবে টাইম ম্যানেজমেন্ট করবে?

মনোযোগ নষ্ট করবে এমন জিনিস থেকে দূরে থাকা

আপনি যদি কোনো কাজ খুব মনযোগ দিয়ে করছেন কিন্তু হঠাৎ মোবাইলে ফোন এলো বা নোটিফিকেশন এলো; যার জন্য আপনার মনোযোগ নষ্ট হল। বার বার এইরকম হলে কাজের উপর ফোকাস করতে পারবেন না। তাই এরকম জিনিস থেকে নিজেকে দূরে রাখুন, যা আপনার মনোযোগ নষ্ট করবে। সাধারণত মোবাইলই আমাদের মনোযোগ নষ্ট করে থাকে, তাই কাজের সময় মোবাইল বন্ধু বা সাইলেন্ট রাখুন।

when working do not use mobile
কাজের সময় মোবাইল ব্যবহার করবেন না

এছাড়াও এরকম আরো কোনো জিনিস যা আপনাকে কাজের সময় বার বার বিরক্ত করছে, তাহলে সেরকম জিনিসকে দূরে রাখুন। বার বার মনোযোগ নষ্ট হওয়ার ফলে যে কোনো কাজ করতেই সময় লাগবে। যার ফলে টাইম ম্যানেজমেন্ট করে চলতে পারবেন না।

আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, কাজের সময় যদি কেউ অন্য কোনো কাজের কথা বা কিছু করে দিতে বলে তাহলে না বলতে শেখা।

ধরুন আপনি মন দিয়ে কাজ করছেন, হঠাৎ কেউ এসে বাইরে ঘুরতে যাওয়ার জন্য বলল, তো আপনি তখনই তাকে না বলে নিজের কাজ শেষ করে নিন। তারপর যদি আপনার কাজ না থাকে তাহলে আপনি ঘুরতে যেতে পারেন। আপনি যদি তখনই কাজ না করে, তার সাথে চলে যান এই ভেবে যে সে খারাপ পাবে; তাহলে আপনার কাজের ক্ষতি হবে। তাই টাইম ম্যানেজমেন্টে করার জন্য না বলতে শেখা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

learn to say no
টাইম ম্যানেজমেন্ট করার জন্য না বলতে শেখা প্রয়োজন

প্রথম প্রথম সময় বা টাইম ম্যানেজমেন্ট করতে একটু অসুবিধা হবে। কিন্তু প্রতিদিন প্র্যাকটিস বা অনুশীলন করলে তা অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে এবং আপনি সফলতা অর্জন করতে পারবেন।

আলোচনাটি ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারো। আর এই রকম আর পোস্ট পাওয়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে https://careerbondhu.com/ নিয়মিত চোখ রাখো।

পর্ব সমাপ্ত!

কেরিয়ার ও ব্যবসা সম্পর্কিত কোনো প্রশ্ন থাকলে বা কি রকম ধরনের পোস্ট চাইছো, তা নীচের ছবিটায় ক্লিক করে জানাতে পারো↓

careerbondhu-telegram-channel

বিশেষ দ্রষ্টব্য

  • এই নিবন্ধে ব্যবহৃত তথ্য ইন্টারনেট, সংবাদ পত্র, পত্রিকা, প্রকাশিত রিপোর্ট ইত্যাদি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। নিবন্ধে ব্যবহৃত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কোর্সের নাম ইত্যাদি শুধুমাত্র শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে। এই ব্যাপারে আরো জানার জন্য এই পাতাটি পড়ে নেবার অনুরোধ রইল → Disclaimer
  • নিবন্ধটি আমরা যথাসম্ভব ত্রুটি মুক্ত রাখার চেষ্টা করেছি, তথ্যে কোনরূপ ত্রুটি চিহ্নিত হলে তা অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি হিসাবে গণ্য হবে, চিহ্নিত ত্রুটি এই পাতা থেকে তা আমাদের জানানো যেতে পারে → Report an error
error: Content is protected !!