Category – Tips
বিজ্ঞানসম্মত নাম, ইতিহাসের সাল থেকে শুরু করে অঙ্কের সূত্র – ছাত্রছাত্রীদের অনেক পড়াই মুখস্থ রাখতে হয়। কিছু ছাত্রছাত্রীর মুখস্থ করার ক্ষমতা ভালো থাকে আবার অনেকের মুখস্থ করতে ভীষণ অসুবিধা হয়। কিন্তু ভালো রেজাল্ট করার জন্য তো আমাদের সকলকেই পড়া মুখস্থ করতেই হয়।
তোমাদের অনেকের মনেই একটি প্রশ্ন থাকে – কিভাবে তাড়াতাড়ি পড়া মুখস্থ করা যায় বা পড়া মুখস্থ করার সহজ উপায় কি? আজ আমরা এই প্রশ্নের উত্তরই আলোচনা করবো এই প্রবন্ধে।
Table of Contents
কিভাবে পড়া দ্রুত মুখস্থ করবে?
দ্রুত পড়া মুখস্থ করার কিছু উপায় নীচে আলোচনা করা হল;
উপযুক্ত পরিবেশ
পড়তে বসার জন্য একটি উপযুক্ত পরিবেশ প্রয়োজন হয়। শান্ত পরিবেশ যেখানে কেউ তোমায় বিরক্ত করবে না, সেরকম পরিবেশে পড়তে বসা উচিত। এই পরিবেশে পড়া দ্রুত মুখস্থ করতে পারবে। যদি কোনোরকম আওয়াজ বা অশান্ত পরিবেশ থাকে, তাহলে সেখানে বার বার মনোযোগ বিঘ্নিত হবে যার ফলে তোমার পড়া মুখস্থ হতে সময় লাগবে।
উপযুক্ত সময়
অনেকেরই পড়ার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী দৈনিক কাজগুলি সেরে যখন ফাঁকা সময় পায় সেই সময়টাই পড়ার জন্য ব্যবহার করে। যেমন, তুমি যদি স্কুলের ছাত্র/ছাত্রী হও; সেক্ষেত্রে তুমি সকালে উঠে স্কুল যাওয়ার আগে সময় পেতে পারো নাহলে স্কুল, প্রাইভেট টিউশনের পর সে সময় রয়েছে সেটিই পড়ার সময়।
আবার, অনেকেরই মনে একটি প্রশ্ন থাকে যে রাতে নাকি সকালে পড়া মুখস্থ কোন সময় ভালো হয়, এই বিষয়ে জানতে দেখে নাও↓
রাত জেগে পড়া নাকি সকালে ঘুম থেকে উঠে পড়া; কোনটি উপযুক্ত সময়?
সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল তোমার যেই সময়টা পড়তে ভালোলাগে বা পড়ার ইচ্ছা হয় সেটিই হল পড়ার উপযুক্ত সময়, সেটি সকাল, দুপুর, রাত যখন খুশি হতে পারে। তোমার যখন পড়তে ইচ্ছা করবে তখনই পড়া তাড়াতাড়ি মুখস্থ হবে। জোর করে পড়তে বসলে পড়া মুখস্থ হতে বেশি সময় লাগে। তাই তোমার পড়তে বসার জন্য যে সময়টা ভালো লাগে এবং এনার্জি থাকে সেটিই হল তোমার জন্য উপযুক্ত সময়।
ভালো করে পড়া বোঝা
পড়া যদি ভালো করে বোঝা থাকে তাহলে তা মুখস্থ তাড়াতাড়ি হয়। তাই স্কুল বা প্রাইভেট টিউশনে যখন পড়া বোঝাবে তখন পড়া মন দিয়ে শুনতে এবং ভালো করে বুঝে নিতে হবে। পড়তে পড়তে যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে তা শিক্ষকদের থেকে জেনে নিতে হবে। তুমি যে পড়ার বিষয়টি মুখস্থ করবে সেটি সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট থাকলে তা খুব দ্রুত মুখস্থ হয়ে যাবে।
নোটস তৈরি করে পড়া
নোটস তৈরি করে পড়লে পড়া তাড়াতাড়ি মুখস্থ হয়। অবশ্যই নিজের তৈরি নোটস বেশি কার্যকারী হয়। নোটস হল পড়ার বিষয়বস্তুকে সংক্ষিপ্ত করে লেখা। নোটস তৈরি করে পড়ার ফলে সম্পূর্ণ বই পড়তে হয় না এবং সংক্ষিপ্ত নোটস থেকে পড়া দ্রুত মুখস্থ হয়।
নোটস নিজে কিভাবে বানাবে ভাবছো? চিন্তা নেই আমাদের একটি প্রবন্ধে নোটস কিভাবে তৈরি করতে হয়, তা নিয়ে আলোচনা করা রয়েছে।
পড়ে নাও – নোটস কিভাবে তৈরি করবে? | নোটস তৈরি করার সহজ উপায়
কল্পনা করে পড়া
যখন কোনো বিষয় পড়বে তা কল্পনা করে পড়া উচিত। যেমন, তুমি ইতিহাসে কোনো যুদ্ধের কথা পড়ছো তাহলে তুমি যুদ্ধ নিয়ে কল্পনা করে পড়লে, ভূগোল বিষয়ে মহাকাশ সম্পর্কে পড়ছো সেক্ষেত্রে চাঁদ, সূর্য, পৃথিবী ইত্যাদি কল্পনা করে পড়া। এইভাবে কল্পনা করে পড়লে পড়া দ্রুত মুখস্থ হবে এবং মনে থাকবে।
বইতে অনেক ছবি দেওয়া থাকে তা দেখে পড়তে পারো এবং বর্তমানে ইন্টারনেটের যুগে সব কিছুর ছবি পেয়ে যাবে তা দেখে নিতে পারো।
লিখে লিখে পড়া
অনেক মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে জানা গেছে, যে তারা অনেকেই লিখে লিখে পড়া মুখস্থ করতেন। পড়ার সময় খাতা পেন নিয়ে বসতে হবে। যেই লাইনটি কঠিন বা মুখস্থ হচ্ছে না বা কোনো সাল মনে থাকছে না, এক্ষেত্রে লিখে লিখে পড়ার অভ্যাস করলে তা ভালোভাবে মনে থাকবে। মুখস্থ করার পর নিজেকে যাচাই করার জন্য না দেখে লেখা এবং তা মিলিয়ে নেওয়া। সম্পূর্ণ সঠিক না হওয়া পর্যন্ত তা পড়া এবং লেখা চলতে থাকবে। এইভাবে লিখে পড়লে যেমন পড়া দ্রুত মুখস্থ হবে তেমনই অনেক দিন মনেও থাকবে সেই পড়া।
লাউডে বা জোরে রিডিং পড়া
অনেক ছাত্র-ছাত্রীই মনে মনে পড়তে পছন্দ করে জোরে বা লাউডে পড়া পছন্দ করে না। কিন্তু লাউডে অর্থাৎ জোরে পড়লে পড়া বেশি তাড়াতাড়ি মুখস্থ হয় এবং মনে থাকে। মনে মনে পড়লে আমাদের কানে তা পৌছায় না, কিন্তু জোরে পড়লে তা আমাদের কানে পৌছায়; আর শোনা জিনিস আমরা বেশিদিন মনে থাকে। তাই এইভাবে পড়া মুখস্থ খুব দ্রুত হয়।
আমরা কিন্তু খুব চিৎকার করে পড়ার কথা বলা হয়নি, যে টুকু জোরে পড়লে পড়া কানে স্পষ্টভাবে পৌঁছাবে সেরকম জোরে পড়া উচিত।
একটি বিষয় মনে রাখবে রিডিং পড়া যেনো স্পষ্ট উচ্চারণ সহকারে হয়। কথা জড়িয়ে পড়লে তা আমাদের শুনতে অসুবিধা হবে, যার ফলে মুখস্থ করা সত্ত্বেও মনে থাকবে না।
একটানা বসে পড়া নয়
পড়া কখনই একটানা পড়তে নেই, মাঝে ছোটো বিরতি নেওয়া উচিত। এতে পড়া বোরিং লাগে না এবং পড়া মুখস্থ তাড়াতাড়ি হয়। বসে পড়তে পড়তে অনেক সময় ঘুম পেয়ে যেতে পারে। মাঝে মাঝে যে ঘরে পড়তে বসেছো ওই ঘরে হেঁটে হেঁটেও পড়তে পারো। এটিও পড়া দ্রুত মুখস্থ করতে সাহায্য করে।
রিভাইস করা
পড়া মুখস্থ করার পর যদি নিয়মিত রিভিশন না দেওয়া হয় তাহলে পরীক্ষার সময় তা মনে থাকবে না। তাই পড়া ভালো করে মনে রাখার জন্য বার বার রিভিশন করা উচিত। এতে পড়া মুখস্থ ও মনে থাকবে।
বিরক্ত বা বাঁধা সৃষ্টি করবে এমন জিনিস দূরে রাখা
পড়ার সময় যে জিনিস তোমায় বাঁধা দেবে বা বিরক্ত করবে, সেরকম জিনিস দূরে রাখো। যেমন, পোষা প্রাণী থাকলে পড়ার সময় তাকে নিয়ে বসবে না, সে অনেক সময় তোমায় বিরক্ত করতে পারে।
বর্তমানে মোবাইলের মাধ্যমে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে, তাই সেটি নিয়ে পড়তে বসতে পারো কিন্তু অযথা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করবে না পড়ার সময়। মোবাইল সাইলেন্ট রাখা যখন প্রয়োজন হবে পড়াশোনার জন্য তখনই মোবাইল ব্যবহার করা উচিত।
আমরা পড়া সহজে মুখস্থ করার অনেকগুলি পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করলাম। আশা করি দ্রুত পড়া মুখস্থ করার উপায়গুলি তোমায় পড়তে সাহায্য করবে। আমাদের এই প্রবন্ধটি পড়ে ভালো লাগলে এবং উপকারী হলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারো। এরকমই বিভিন্ন টিপস পেতে কেরিয়ার বন্ধুর ওয়েবসাইটের https://careerbondhu.com/ সঙ্গে যুক্ত থাকো এবং টেলিগ্রামের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রবন্ধ পেতে জয়েন করো আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল – https://t.me/careerbondhu.
পর্ব সমাপ্ত!
কেরিয়ার ও ব্যবসা সম্পর্কিত কোনো প্রশ্ন থাকলে বা কি রকম ধরনের পোস্ট চাইছো, তা নীচের ছবিটায় ক্লিক করে জানাতে পারো↓
বিশেষ দ্রষ্টব্য
- এই নিবন্ধে ব্যবহৃত তথ্য ইন্টারনেট, সংবাদ পত্র, পত্রিকা, প্রকাশিত রিপোর্ট ইত্যাদি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। নিবন্ধে ব্যবহৃত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কোর্সের নাম ইত্যাদি শুধুমাত্র শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে। এই ব্যাপারে আরো জানার জন্য এই পাতাটি পড়ে নেবার অনুরোধ রইল → Disclaimer।
- নিবন্ধটি আমরা যথাসম্ভব ত্রুটি মুক্ত রাখার চেষ্টা করেছি, তথ্যে কোনরূপ ত্রুটি চিহ্নিত হলে তা অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি হিসাবে গণ্য হবে, চিহ্নিত ত্রুটি এই পাতা থেকে তা আমাদের জানানো যেতে পারে → Report an error।