Category – Tips
আপনি কি চাকরী করেন?
অনেক চেষ্টা করেও অফিসের সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হয় না?
অফিসের কাজ বাড়ি এসে শেষ করতে হয়?
উপরের প্রশ্নগুলির উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তাহলে আজকের আলোচনাটি শুধুমাত্র আপনার জন্য।
আমরা আগের একটি প্রবন্ধে টাইম ম্যানেজমেন্ট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। সেই প্রবন্ধে আমরা সকলের জন্য টাইম ম্যানেজমেন্ট করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি। আপনি চাইলে আগের প্রবন্ধটি নীচের লিঙ্ক থেকে পড়ে নিতে পারেন।
আজকের আলোচনার বিষয় অফিসে টাইম ম্যানেজমেন্ট করবেন কিভাবে?
আজকে শুধুমাত্র চাকরিপ্রার্থীদের জন্য অফিসের কাজে কিভাবে টাইম ম্যানেজমেন্ট করবেন তা নিয়ে আলোচনা করবো। তাহলে শুরু করা যাক আজকের আলোচনা।
Table of Contents
অফিসে কিভাবে টাইম ম্যানেজমেন্ট করবেন?
অফিসের কাজ সঠিক সময়ে শেষ করার জন্য প্রয়োজন টাইম ম্যানেজমেন্ট করা। সাধারণত অফিসে প্রতিদিনের কাজ অনুযায়ী টাইম ম্যানেজমেন্ট করা উচিত।
টার্গেট বা গোল সেট করা
আপনার দায়িত্ব অনুযায়ী আপনি একটা লক্ষ্য স্থির করে নিন। আপনাকে কোন কাজ কবে সাবমিট করতে হবে তা মাথায় রেখে একটি টার্গেট সেট করে নিন।
একটি বিষয় মনে রাখবেন, সাবমিট করার তারিখের দুদিন আগে কাজ শেষ করার টার্গেট রাখবেন। কোনো কারণে যদি টার্গেট সেই সময়ে শেষ করতে না পারেন তাহলে আপনার হাতে দুদিন সময় থাকবে তা শেষ করে সাবমিট করার। কিন্তু যদি সাবমিট এবং টার্গেট একই দিন হয়, তাহলে যদি আপনার কাজ শেষ না হয় তাহলে তা সময় মত সাবমিট করতে পারবেন না। তাই সব সময় সাবমিট করার এক বা দু-দিন আগে সেই কাজ শেষ করার টার্গেট রাখা উচিত।
কাজের লিস্ট (list) তৈরি করা
টার্গেট অনুযায়ী কি কি কাজ রয়েছে, তার একটি লিস্ট তৈরি করে নিন। সেই কাজগুলিকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নিন। সেই ভাগ অনুযায়ী একটি প্রতিদিনের কাজের লিস্ট তৈরি করে নিন। এছাড়াও যদি কোনো কাজ থাকে, তাহলে সেটিও লিস্ট করে নিন।
কাজকে প্রায়োটাইজ (Prioritize) করা
যে কাজগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং যে কাজগুলি আগে সাবমিট করতে হবে সেই কাজগুলিকে বেছে নিয়ে প্রায়োটাইজ করে নিন। সেই কাজগুলি আগে শেষ করার চেষ্টা করুন এবং প্রতিদিনের লিস্টে তা নথিভুক্ত করুন।
তালিকা তৈরি করা
প্রতিদিনের যা যা কাজ রয়েছে সেগুলির লিস্ট তো তৈরি করা হল কিন্তু সেগুলির জন্য কতটা সময় ব্যয় করবেন তারও একটি তালিকা তৈরি করে নিন। সময় ও কাজ মিলিয়ে একটি সময়ের তালিকা তৈরি করে নিন। তালিকার মধ্যে লাঞ্চের টাইম ও বিরতির টাইমও রাখতে হবে।
একটি বিষয় লক্ষণীয়, প্রতিদিনের তালিকা আপনি আগের দিনই কাজ শেষ করার পর বানিয়ে নেবেন। যদি আপনি যেদিনের কাজ সেইদিন বানান তাহলে অযথা সময় নষ্ট হবে। কিন্তু আপনি যদি আগের দিন অফিসের কাজ শেষ করার পর কাল কি কি করবেন তার লিস্ট করে রাখেন, তাহলে অফিসে এসে তালিকা অনুযায়ী কাজ শুরু করতে পারবেন। আগের দিনের যদি কোনো কাজ শেষ না হয় তাহলে সেটিও লিস্টে অ্যাড করে রাখুন।
বিরতি নেওয়া
একটানা কাজ কখনোই করা উচিত নয়। একটি কাজ শেষ করার পর অন্য কাজ শুরু করার আগে একটু ছোটো বিরতি নিয়ে নেওয়া উচিত। এর ফলে কাজ করার জন্য আলাদা এনার্জি আসে।
বিরতির জন্য কোনোভাবেই খুব বেশি সময় নষ্ট করবেন না। বিরতির সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার বা কারোর সাথে গল্প না করে, একটু চা বা কফি খেতে পারেন, অফিসে একটু ঘুরে নিতে পারেন।
মাল্টিটাস্কিং না করা
মাল্টিটাস্কিং অর্থাৎ অনেকগুলি কাজ একসাথে করা, তাই এটি করা একদমই উচিত নয়। একটি একটি করে কাজ শেষ করা উচিত। সব কাজ একসাথে করলে আপনি কোনো কাজেই ফোকাস করে উঠতে পারবেন না। তার ফলে কাজে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই যখন যে কাজ করেবেন সেটি মন দিয়ে করে শেষ করুন এবং তারপর অন্য কাজ শুরু করুন। এতে সময়ও কম লাগে।
কাজ পরিবর্তন করা
একটি কাজ একটানা করলে একঘেয়েমি আসে। তাই একঘেয়েমি কাটানোর জন্য একই কাজ টানা না করে মাঝে অন্য কোনো কাজ করা উচিত। এরফলে কাজ করতে ভালো লাগবে এবং সব কাজই সময়মত শেষ হবে।
মোবাইল দূরে রাখা
কাজের সময় মোবাইল ব্যবহার না করাই উচিত। যখন আপনি কোনো কাজ শুরু করছেন তখন মোবাইল একদম সাইলেন্ট মোডে রেখে দিন। সেরকম হলে একটি কাজ শেষ করার পর একবার মোবাইল চেক করে নিতে পারেন যে কোনো দরকারি কল এসেছিল কি না। কিন্তু মোবাইল হাতে নিয়ে যদি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে শুরু করেন তাহলে কিন্তু টাইম ম্যানেজমেন্ট করা সম্ভব হবে না।
অযথা কাজের দায়িত্ব না নেওয়া
আপনি একাই সব কাজের দায়িত্ব নেবেন না। আপনার যা কাজ শুধুমাত্র সেটি করারই চেষ্টা করুন। আপনি যদি যেচে অন্য কাজের দায়িত্ব নেন তাহলে আপনার যা কাজ রয়েছে, তা সঠিক সময়ে শেষ করতে পারবেন না। তাই যদি সহকর্মী আপনাকে কোনো কাজ করার জন্য বলে তাহলে তাকে না বলার চেষ্টা করুন এবং নিজেকে কাজে ব্যস্ত দেখান।
আপনি নিজের কাজকে কোনো সহকর্মী বা টিম মেম্বারদের সাথে ভাগ করে নিতে পারেন। কাজ ভাগ করে নিলে শুধুমাত্র আপনার কাজের চাপ কমবে তা নয়, তাদের নতুন কাজ শিখতে এবং দক্ষতা বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করবে।
আর পড়ুন – অফিসের প্রথম দিন কিভাবে কাটাবেন?
নিজের অভিজ্ঞতা থেকে শেখা
আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট শুরু করার পর প্রতিদিন যা যা অসুবিধা হচ্ছে, সেগুলি নোট করে রাখুন। আগের দিন টাইম ম্যানেজমেন্ট করতে যে যে অসুবিধা হয়েছে সেগুলি আর যাতে না হয় তার চেষ্টা করুন। প্রতিদিনের টাইম ম্যানেজমেন্ট করতে করতে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন কিভাবে আরো ভালোভাবে টাইম ম্যানেজমেন্ট করতে পারবেন।
অফিসে টাইম ম্যানেজমেন্ট করার সময় প্রথম প্রথম অসুবিধা হলেও তা পরে অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে। সঠিক টাইম ম্যানেজমেন্ট করতে পারলে আপনি সব কাজ অফিসেই সময়মত শেষ করতে পারবেন।
অফিসের কাজ বয়ে বাড়ি নিয়ে আসতে হবে না। বাড়িতে আপনি আপনার মতো সময় কাটাতে পারবেন। যার ফলে মন ভালো থাকবে এবং কাজের প্রতি ভালোলাগা তৈরি হবে।
আশা করি আমাদের এই প্রবন্ধটি পড়ে আপনার ভালো লাগলো এবং টাইম ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত সকল প্রশ্নের উত্তর আপনি পেয়ে গেছেন। এরকম আরো পোস্ট পাওয়ার জন্য কেরিয়ার বন্ধুর ওয়েবসাইটের https://careerbondhu.com/ সঙ্গে যুক্ত থাকুন।
পর্ব সমাপ্ত!
কেরিয়ার ও ব্যবসা সম্পর্কিত কোনো প্রশ্ন থাকলে বা কি রকম ধরনের পোস্ট চাইছো, তা নীচের ছবিটায় ক্লিক করে জানাতে পারো↓
বিশেষ দ্রষ্টব্য
- এই নিবন্ধে ব্যবহৃত তথ্য ইন্টারনেট, সংবাদ পত্র, পত্রিকা, প্রকাশিত রিপোর্ট ইত্যাদি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। নিবন্ধে ব্যবহৃত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কোর্সের নাম ইত্যাদি শুধুমাত্র শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে। এই ব্যাপারে আরো জানার জন্য এই পাতাটি পড়ে নেবার অনুরোধ রইল → Disclaimer।
- নিবন্ধটি আমরা যথাসম্ভব ত্রুটি মুক্ত রাখার চেষ্টা করেছি, তথ্যে কোনরূপ ত্রুটি চিহ্নিত হলে তা অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি হিসাবে গণ্য হবে, চিহ্নিত ত্রুটি এই পাতা থেকে তা আমাদের জানানো যেতে পারে → Report an error।