Saree business
Category – Business

আপনি কি শাড়ির ব্যবসা শুরু করতে চাইছেন?
স্বল্প পুঁজিতে, স্বনির্ভর হতে চাইছেন? তাহলে শাড়ির ব্যবসা আপনার জন্য হতে পারে সাফল্যের রাস্তা।

শাড়ির ব্যবসা কি?

ভারতবর্ষের নারীদের অন্যতম পছন্দের পোশাক হল শাড়ি। ভারতের প্রতিটি মহিলা দৈনন্দিন জীবনে প্রাত্যহিক বা বিশেষ অনুষ্ঠানে শাড়ি পরেন। বলাই বাহুল্য, শাড়ির অজস্র ডিজাইন বাজারে পাওয়া যায়, এবং মহিলারা ভিন্ন ভিন্ন নিত্যনতুন ডিজাইনের শাড়ি নিয়মিত ক্রয় করেন।

শাড়ির ব্যবসার মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন ধরনের শাড়ি পৌঁছে দিতে পারেন আপনার ক্রেতাদের কাছে এবং তা থেকে উপার্জন করে আপনি নিজে স্বনির্ভর হতে পারেন।


আরো পড়ুন – চা ব্যবসা সম্পর্কে

কেন শাড়ির ব্যবসা করবেন?

সব ব্যবসার ভিত্তি হল বাজারের চাহিদা এবং পণ্যের যোগান। আমরা শাড়ির ব্যবসার ক্ষেত্রে এই দুটি দিক দেখে নিই।

কোন মহিলার আলমারিতে একটিও শাড়ি থাকবে না, এটা ভাবাই দুঃসাধ্য এবং মহিলারা প্রায় সারাবছর বিভিন্ন সময় একাধিক শাড়ি কিনে থাকেন। তাই শাড়ির ব্যবসার একটি চিরস্থায়ী বাজার ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।

পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন হ্যান্ডলুম, ছোটকারখানা এবং হাট – বাজার রয়েছে, যেখান থেকে প্রয়োজন মত শাড়ি পাওয়া যেতে পারে। সুতরাং শাড়ির ব্যবসায় পণ্যের যোগান পর্যাপ্ত রয়েছে।

এবার আমরা শাড়ির ব্যবসার কয়েকটি দিক দেখে নেব।


আমাদের Facebook পেজ লাইক করার অনুরোধ রইল। ↓


Strength

– স্বল্প পুজির বিনিয়োগ

– কোন আলাদা দক্ষতার প্রয়োজন নেই, সবাই এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

Weakness

এককালীন অনেক শাড়ির ষ্টক রাখতে হয়, এতে মূলধন আটকে যাবার সম্ভাবনা থাকে।

Opportunity

চিরনতুন বাজার, চাহিদা কমার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।

Threats

প্রতিযোগিতামূলক বাজার


আরো পড়ুন – হোম কিচেন ব্যবসা সম্পর্কে

কারা করবেন শাড়ির ব্যবসা?

ভিন্ন বয়সের পুরুষ এবং মহিলা শাড়ির ব্যবসায় নামতে পারেন। তবে এই ব্যবসায় নামার আগে আপনি অবশ্যই দেখে নেবেন নিম্নলিখিত মানসিকতা আপানার আছে কিনা।

  • যারা স্বল্প পুঁজিতে ব্যবসার কথা ভাবছেন
  • যাদের মহিলাদের পোশাক সম্পর্কে আগ্রহ আছে
  • যাদের সৌন্দর্যবোধ ও ডিজাইন সম্পর্কে ধারণা আছে
  • সর্বোপরি ব্যবসা করার দৃঢ় মানসিকতা রয়েছে

careerbondhu.com whatsapp channel

শাড়ির ব্যবসায় সাফল্যলাভের জন্য কি কি দক্ষতার প্রয়োজন?

শাড়ির ব্যবসায় সাফল্যলাভের জন্য যে সকল দক্ষতা অবশ্যই আপনার থাকা প্রয়োজন সেগুলি হল –

সঠিকভাবে কথা বলার দক্ষতা (communication skill) –

এই ব্যবসার সাফল্যের অন্যতম মূলমন্ত্র হল কথা বলার দক্ষতা। ভিন্ন ভিন্ন ধরণের ক্রেতা, ভিন্ন ভিন্ন চাহিদা নিয়ে আপনার কাছে আসবে, আপনাকে তাদের সকল প্রয়োজনীয়তা বুঝে আপনার কালেকশনে থাকা শাড়ি দেখাতে হবে। ধৈর্যের সাথে সঠিক শাড়ি, সঠিক ক্রেতাকে দিলে তবেই আপনার সাফল্য আসবে।

সবার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা (Good Public Dealing) –

মনে রাখতে হবে শাড়ির ব্যবসায় আপনি নিজে কোন শাড়ি প্রস্তুত করছেন না। আপনি বাজার থেকে শাড়ি কিনে তা ক্রেতাদের সামনে আনছেন। ফলে এই সমগ্র প্রক্রিয়াতে আপনাকে, বিভিন্ন শাড়ি ব্যবসায়ী, খুচরো বিক্রেতা এবং সর্বোপরি বিক্রেতার সাথে নিয়মিত কারবার করতে হচ্ছে। ফলের সবার সাথে আপনাকে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলা অভ্যাস করতে হবে।

লেনদেন সম্পর্কে সচেতনতা (Basic knowledge of trading) –

এই ব্যবসায় আপনি বিভিন্ন ধরণের শাড়ি কিনবেন, কিন্তু সেই শাড়ি আপনার থেকে কবে ক্রেতা কিনবে তা আপনি জানেন না। ফলে আপনাকে বেশ কিছু দিনের জন্য ঐ শাড়ির ষ্টক রাখতে হতে পারে। তাই কবে, কোন শাড়ি কি দামে কিনছেন এবং তা কবে, কোন দামে বিক্রি করছেন তার হিসাব সম্পর্কে সচেতন থাকতেই হবে।

লেটেস্ট ফ্যাশন সম্পর্কে সচেতন থাকা (Regular updates on latest fashion) –

সফল শাড়ি ব্যবসায়ীকে বাজারের খবর সম্পর্কে সচেতন থাকতেই হবে। শাড়ি বা পোশাকের ক্ষেত্রে সময়ের সাথে সাথে ফ্যাশনের ট্রেন্ড পরিবর্তিত হয়, তাই লেটেস্ট ফ্যাশনের শাড়ি আপনার কালেকশনে থাকলে তা বিক্রির সম্ভাবনা বাড়বে। এই ব্যাপারে নিয়মিত পত্রিকা বা ইন্টারনেট সার্চ করলে আপডেট থাকা যাবে।
careerbondhu.com telegram channel

কিভাবে করবেন শাড়ির ব্যবসা?

আমরাই এই আলোচনায় কেবলমাত্র B to C [Business to Consumer], অর্থাৎ যেখানে আপনি শাড়ি সরাসরি ক্রেতাকে বিক্রয় করছেন সেই ধরণের ব্যবসা নিয়েই আলোচনা করবো।

শাড়ির দোকান

পুঁজি (Capital)

প্রথমে আপনার পুঁজি বা মূলধন কত আছে তা দেখে নিন। মূলধন অনুযায়ী আপনি আপনার ব্যবসার পরিকল্পনা করবেন। একটি শাড়ির দোকান শুরু করার জন্য নুন্যতম 4 লক্ষ থেকে 5 লক্ষ টাকার প্রয়োজন হতে পারে। স্থান এবং ব্যবসার পরিধির উপর ভিত্তি করে পুঁজি বাড়তে বা কমতে পারে।

ব্যবসার নামকরণ (Brand Name)

আপনার ব্যবসার নামকরণ একটি জরুরী বিষয়। ব্যবসার নাম এমন হওয়া উচিৎ, যা খুব সহজেই মনে রাখা যায় আবার সেই নাম আপনাকে অন্য ব্যবসার মধ্যে আলাদা করে আপনার অস্তিত্ব বজায় রাখতে পারবে।


আরো পড়ুন – কেক বেকারির ব্যবসা সম্পর্কে

দোকান (Shop)

এবার আপনাকে আপনার ব্যবসার কেন্দ্র বা দোকান নির্বাচন করতে হবে। যদি নিজের বা পরিবারের কোন দোকানঘর থাকে সেক্ষেত্রে সেই জায়গায়, অথবা আপনাকে কোন দোকানঘর ভাড়া নিতে হবে। মনে রাখবেন দোকানটি জনবহুল জায়গায় হলে আপনি আরো দ্রুত ব্যবসার শ্রীবৃদ্ধি করতে পারবেন। দোকানঘর নির্দিষ্ট হলে, প্রয়োজন মতো তা সাজিয়ে নিন। এই ব্যপারে আপনি কোন ইন্টিরিয়ার ডিজাইনারের সাথে কথা বলতে পারেন।

(ট্রেড লাইসেন্স) Trade License –

এরপর ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স নিতে হবে। এর জন্য আপনি আপনার কর্পোরেশন, পৌরসভা বা পঞ্চায়েতে আবেদন করুন। বর্তমানে এই আবেদন সম্পূর্ণটাই খুব কম খরচে অনলাইনে হচ্ছে।

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট (Bank Account Opening)

এরপর আপনি আপনার ব্যবসাক্ষেত্রের কাছাকাছি ব্যাংকে একটি current account খোলার জন্য আবেদন করুন। মনে রাখবেন, একটি ব্যবসার জন্য current account থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ব্যবসায়িক হিসাব (Accounting Practice)

শাড়ির ব্যবসায় আপনাকে নানান ডিজাইনের ভিন্ন ভিন্ন শাড়ি রাখতে হবে এবং সেগুলি আলাদা আলাদা দামে বিক্রি করতে হবে। শাড়ির কোন নির্দিষ্ট দাম বা MRP না থাকার জন্য ক্রয় মূল্য এবং বিক্রয়মূল্য মনে রাখতে অসুবিধা হতে পারে। তাই ব্যবসায়িক হিসাব রাখার জন্য আপনি বাজার চলতি যে কোনো Accounting Software ব্যবহার করতে পারেন। এতে বিল করা, ষ্টকের হিসাব রাখা, লাভ-ক্ষতির হিসাব রাখা এবং সর্বপরি বছর শেষে Income Tax ফাইল করতে সুবিধা হবে।
careerbondhu.com whatsapp channel

শাড়ির ষ্টক ক্রয় (stock purchase)

এরপর আপনাকে বিভিন্ন ডিজাইনের শাড়ির ষ্টক কিনতে হবে যা আপনি আপনার দোকান থেকে বিক্রি করবেন।

বিপণন (Marketing)

আপনার দোকান প্রস্তুত, শাড়ির ষ্টক এসে গেছে, বিক্রি করার সরকারী লাইসেন্স পেয়ে গেছেন; এবার কি করবেন ভাবছেন? এবার আপনি আপনার সম্ভাব্য গ্রাহকদের আপনার ব্যবসার কথা জানাবেন, দোকানের প্রচারের জন্য লিফলেট প্রিন্টিং, ব্যানার প্রিন্টিং ইত্যাদি চিরচারিত মাধ্যমের পাশাপাশি ফেসবুক বিজ্ঞাপন, গুগুল বিজনেস ইত্যাদি ডিজিটাল মাধ্যমের ইত্যাদির সাহায্য নিন।

অনলাইনে শাড়ির ব্যবসা

এক্ষেত্রেও আপনাকে প্রথমে পুঁজি নির্ধারণ করতে হবে, অনলাইনে ব্যবসার জন্য নুন্যতম 30,000 পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে। তবে স্থান এবং বাজারের উপর ভিত্তি করে এই পুঁজি বাড়তে পারে।

এরপর ব্যবসার একটি নাম ভেবে নিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নিতে হবে এবং তার ভিত্তিতে আপনি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন।


আরো পড়ুন – কোচিং সেন্টার ব্যবসা সম্পর্কে

এরপর আপনি তিনভাবে অনলাইনে শাড়ির ব্যবসা করতে পারেন।

ক) সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে –

ফেসবুক, ইন্সটাগ্রামে আপনার পেজ খুলে তাতে আপনার কালেকশন সবার সাথে শেয়ার করতে পারেন। এমনকি বিনামূল্যে WhatsApp বিজনেস অ্যাকাউন্ট খুলে তার মাধ্যমেও পরিচিত এবং নতুন ক্রেতার কাছে পৌছাতে পারেন।

খ) নিজের ওয়েবসাইট থেকে –

নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করে তার মাধ্যমে ক্রেতার কাছে পৌছাতে পারেন।

গ) অন্য কোনো ই-কমার্স ওয়েবসাইটের মাধ্যমে –

Amazon, Flipkart বা অন্য কোনো ই-কমার্স সাইটের মাধ্যমে শাড়ি বিক্রি করতে পারেন।

আশা করি, আমরা শাড়ির ব্যবসা সম্পর্কে আপনাকে একটি ধারণা দিতে পারলাম। তাহলে আর দেরি না করে, আজ থেকেই পরিকল্পনা শুরু করে দিন এবং খুব দ্রুত হয়ে উঠুন একজন সফল ব্যবসায়ী।

পর্ব সমাপ্ত!


নিয়মিত আপডেট পাওয়ার জন্য ফলো করুন

WhatsApp Channel | Telegram Channel | Facebook Page


careerbondhu-telegram-channel

বিশেষ দ্রষ্টব্য

  • এই নিবন্ধে ব্যবহৃত তথ্য ইন্টারনেট, সংবাদ পত্র, পত্রিকা, প্রকাশিত রিপোর্ট ইত্যাদি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। নিবন্ধে ব্যবহৃত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কোর্সের নাম ইত্যাদি শুধুমাত্র শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে। এই ব্যাপারে আরো জানার জন্য এই পাতাটি পড়ে নেবার অনুরোধ রইল → Disclaimer
  • নিবন্ধটি আমরা যথাসম্ভব ত্রুটি মুক্ত রাখার চেষ্টা করেছি, তথ্যে কোনরূপ ত্রুটি চিহ্নিত হলে তা অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি হিসাবে গণ্য হবে, চিহ্নিত ত্রুটি এই পাতা থেকে তা আমাদের জানানো যেতে পারে → Report an error
error: Content is protected !!